হাইকু এবং প্রাসঙ্গিক ভাবনা
‘হাইকু’ জাপানি কবিতার একটি জনপ্রিয় ধারা। হাইকু, ‘হক্কু’ কিংবা ‘হাইকাই’
নামেও লেখা হয়েছে। হাইকুকে ‘রেঙ্গা’ নামেও অবিহিত করা হয়েছে। প্রচলিত
হাইকুর গঠনশৈলী ৫-৭-৫, ৭-৭। ৫-৭-৫ গঠন শৈলীর রেঙ্গাকে বৃহদ পর্ব এবং ৭-৭
গঠন শৈলীর রেঙ্গাকে ছোট পর্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে প্রকৃত হক্কুর বিষয় এবং বাস্তবতা আজো বিতর্কিত হলেও ধারণা করা হয় যে,
রেঙ্গা নামটি জাপানি কবিতার ধ্রুপদি ধারণা থেকে নেয়া হয়েছিল যার শুরুর
প্রক্রিয়া মননশীন চিন্তার রূপকল্প। তবে শুরুতে লেখার প্রক্রিয়াগত
বিষয়বস্ততে কিছুটা সৃজণশীলতার অভাব ছিল। আধুনিক হাইকুর কবিরা প্রকৃতি
রোমান্স, সেক্স, সহিংসতা, সমাজঘনিষ্ট বিষয়বলী তাদের হাইকুর অবয়বে তুলে
ধরলেও প্রাচীন লেখকরা এটি পরিহার করতেন। ফলে তাদের লেখায় দুবোর্ধ্যতার
বিষয়টি পরিলতি ছিল। আধুনিক হাইকু দুর্বোধ্য নয় ববং এটি পাঠকের কাছে ভীষণ
সহজবোধ্য এবং জীবন ঘনিষ্ঠ। প্রাচীন হাইকুর কবিরা লেখার সংখ্যা বৃদ্ধিতে
বেশি উৎসাহী ছিলেন কিন্তু আধুনিক কবিরা সংখ্যা বৃদ্ধির চেয়ে এর
সাহিত্যমূল্যের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। আধুনিক এবং প্রাচীন দু’টি
হাইকু থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে।
প্রচীন- ‘এ সড়কে কোথাও
কোন জীবন নেই তবু
শরতের সন্ধ্যা আসে’
(মূল : মাতস্যুও বাশো/ অনুবাদ : লেখক)
আধুনিক- ‘মৃত্যুর সংবাদগুলো
ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে
ছাপার অরে’
(মূল : ক্রিস্টেন ডেমিং/ অনুবাদ : লেখক)
উল্লেখিত প্রথম হাইকুটির চেয়ে দ্বিতীয়টি অনেক বেশি সমৃদ্ধ এবং তা গতানুগতা
থেকে গতিশীলতা পেয়েছে। যা অন্তত ‘আহ!’ জাতীয় শব্দ দিয়ে শুরু হয়নি। তাই সবার
পে একজন শক্তিশালী হাইকু লেখক হওয়া সম্ভব নয়।